সাধারনত হিপ ও নি ( হাটু) প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আঘাত জনিত ব্যাথা নিয়ে রোগীরা আসে, আবার আঘাত ছাড়া ব্যাথা নিয়েও রোগী আসেন। হিপ এর ক্ষেত্রে যে ব্যাথার সমস্যা হয় সেটা হলো অল্প বয়সে বাত ব্যাথা। ছেলেদের ক্ষেত্রে দেখা যায় EVM কোমরের পেশির ব্লাড সারকুলার কমে যায়। এর কারন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অজানা। তবে স্টরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবন এর জন্য দায়ী। এছাড়া মোটা হওয়ার জন্য যে ঔষধ সেবন করে সেগুলো হিপের ব্যাথা বাড়ায়। এর কারন স্টরয়েড জাতীয় ঔষধ ব্লাড সারকুলার কমিয়ে দেয়।
হাটু সমস্যায় বেশিরভাগ দেখা রোগী বয়স জনিত কারনে হাটু ক্ষয় নিয়ে সমস্যায় ভোগে। এছাড়া আঘাত জনিত কারনে হাটু ব্যাথা হয়। ক্ষয় জনিত কারনে ব্যাথা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে কম বয়স থেকে শুরু করে বেশি বয়সি সব নারী পুরুষ হাটু ক্ষয় বা কোমড়ের হাড় ক্ষয় জাতীয় সমস্যায় ভোগে, আর এটি মারাত্বক ভাবে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হাটু ও কোমড় ব্যাথার এবং লিগামেন্ট ক্ষয় এর কারন :
১। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।
২। ব্যায়াম না করা।
৩। ওজন বেশি হওয়া।
৪। সিড়িতে অতিরিক্ত উঠানামা করা। সিঁড়ি ব্যবহারের ফলে খুব দ্রুত হাটু ক্ষয় হয়, এজন্য বর্তমানে শহরের মানুষের এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
৫। ভেজালযুক্ত খাবার গ্রহন। বর্তমানে বাংলাদেশের ৮০% খাবার ভেজালযুক্ত।
৬। ভিটামিন ডি এর অভাব।
৭। শহরের লাইফ স্টাইল, বেশি রাত করে ঘুমানো আর সকালে দেরী করে উঠা। ফলে সকালের রোদে যে ভিটামিন ডি সেটি মিস হয়ে যাচ্ছে।
হিপ ও নি এর সমস্যা সমাধান ও প্রতিরোধের উপায় :
১। হাটুর লিগামেন্ট যদি কারো ছিড়ে যায় তাহলে সাথে সাথে অপারেশন করা উচিত। অনেকে ধারনা করেন ব্যায়াম করলে ঔষধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। আসলে লিগামেন্ট একবার ছিড়ে গিয়ে এটি পুনরায় তৈরী হয়না, বরং ৩ মাস ৬ মাস পর এটি খারাপের দিকে চলে যায়।
২। মাংসপেশির ব্যাথার একমাত্র চিকিৎসা হলো ব্যায়াম। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে সুস্থ্য থাকতে হলে।
৩। হিপ ও নি এর ব্যাথা হলে ব্যাথার ঔষধ না খেয়ে একজন ভালো চিকিৎসক এর কাছে গিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। অপরিকল্পিত ভাবে ব্যাথার ঔষধ খেয়ে সমস্যাকে আরো বেশি বিষিয়ে তোলা হয়।
৪। কোন আঘাত জনিত ব্যাথা হলে দুই সপ্তাহের মধ্যে যদি ভালো না হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
৫। নামাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজ নিচে বসে করবেন না।
৬। হাটু ও নি ব্যাথায় দুই বেলা গরম শেক নিলে আরাম পাওয়া যায়।
৭। ফিজিও থেরাপিস্ট থেকে চিকিৎসা নিলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
৮। সিড়ি একদম ব্যবহার না করা।
৯। ৪০ উর্দ্ধ ব্যাক্তি বেশি সচেতন থাকতে হবে এই বয়স পরই হাড় ক্ষয় বেশি হয়। শৃঙ্খলিত জীবন স্বাস্থসম্মত খাবার গ্রহন, ব্যায়াম, ধর্মীয় কাজে মননিবেশই একজন মানুষকে সুস্থ সুন্দর জীবন দিতে পারে।
ড. এ. এম ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
সহকারী অধ্যাপক
জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পূনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল)
Discussion about this post